পদত্যাগ করতেই দলীয় নেতার বিরুদ্ধে পুরোনো পন্থা অবলম্বন করে দুর্নীতির অভিযোগ তুললো তৃণমূল

পঞ্চায়েত নির্বাচনের (West Bengal Panchayat Election 2023) আগে মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসে (Malda TMC) বিস্ফোরণ ! দলের বিরুদ্ধে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, দুর্নীতি, বিশৃঙ্খলা-সহ একাধিক অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসিহাটার অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি মনোজ রাম ৷ তাঁর নিশানায় এলাকার দলীয় বিধায়ক থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ! পদত্যাগপত্র ডাকযোগে জেলা তৃণমূল সভাপতির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি ৷ এ নিয়ে দলের জেলা সভাপতি কোনও মন্তব্য না করতে চাইলেও স্থানীয় বিধায়ক ও অঞ্চল চেয়ারম্যান তাঁর পদত্যাগকে পাত্তা দিতে রাজি নন ৷

 

দল ও এলাকার বিধায়কের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে তৃণমূল ছেড়েছেন তুলসিহাটা অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি মনোজ রাম৷ সেকথা তিনি নিজের সোশাল মিডিয়া ওয়ালেও পোস্ট করেছেন ৷ তাঁর পদত্যাগ নিয়ে দলের হরিশ্চন্দ্রপুর অঞ্চলের সভাপতি সঞ্জীব গুপ্তা মন্তব্য করেছিলেন, ‘মনোজবাবু ছাঁট মাল’৷ সেই ‘ছাঁট মালের’ বিরুদ্ধেই এদিন পথে নামেন এলাকার তৃণমূল কর্মীরা ৷পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ওই নেতার পদত্যাগ যে দলকে বিপদে ফেলতে পারে, তা হয়তো অনুমান করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব৷ তাই বেছে নেওয়া হয়েছে পদত্যাগী নেতাকে আক্রমণের রাস্তা ৷ দল ছাড়তেই ওই পদত্যাগী নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা ৷

তাঁরা পদত্যাগী নেতার কুশপুতুলও দাহ করেন ৷ বিক্ষোভকারীদের নেতা দিল রোজ বলেন, “এতদিন মনোজ রাম এলাকায় প্রচুর দুর্নীতি করেছেন ৷ চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছেন৷ নিজের পিঠ বাঁচাতে এখন তিনি বিধায়কের বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়াচ্ছেন ৷ অথচ বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ তাঁর সততার জন্য জেলায় বিখ্যাত ৷ তাই মনোজ রামের বিরুদ্ধে আমরা আজ বিক্ষোভ দেখিয়েছি ৷”পদত্যাগ করতেই দলীয় নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাস্তায় বিক্ষোভ তৃণমূলের,

মনোজ রাম বলছেন, “আজ যে বাচ্চা ছেলেগুলি আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তাদের আমি দোষ দিই না ৷ তাদের সঙ্গে আমি অনেকদিন কাজ করেছি ৷ ওদের দিয়ে এই কাজ করাচ্ছেন বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ ৷ এদের একনায়কতন্ত্র আর টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রি করার প্রতিবাদেই আমি দল ছেড়েছি ৷ 2007 থেকে আমি তৃণমূল করেছি ৷ এসব করে আমার কিছু করতে পারবেন না তিনি ৷ নীহারবাবু আগে ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন ৷ ওই পৌরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান তাঁর বিরুদ্ধে অডিট বসিয়েছেন ৷ তিনি নাকি পৌরসভার লক্ষ লক্ষ টাকা নয়ছয় করেছেন ৷ তাই তাঁর কাছে মানুষ রামায়ণ পাঠ করতে যাবেন না ৷ মানুষ তাঁর চরিত্র বুঝে গিয়েছেন ৷ সেকারণেই যে মতিহারপুর পঞ্চায়েতে তিনি বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোট পেয়েছিলেন, সেখানেই মাদ্রাসা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট ছয়ে ছয় হয়েছে ৷ বিধায়ক কোনও জবাব দিতে পারবেন ? আসলে উনি হলেন পরিযায়ী পাখি ৷ উড়ে এসে চাঁচলে জুড়ে বসেছেন৷ আগামীতে তাঁকে এলাকাবাসী লাল ঝান্ডা দেখাবেই ৷”