‘বাবাকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করা হচ্ছে’, মুকুল রায়ের ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ঘটনায় এমনটাই মন্তব্য করলেন ছেলে শুভ্রাংশু রায়। তিনি আরও দাবি করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদনাম করতেই মুকুল রায়েকে টেনে রাজনীতি করা হচ্ছে। তাঁর বাবা মানসিকভাবে সুস্থ নন বলেও জানিয়েছেন শুভ্রাংশু। পাশাপাশি তাঁকে না জানিয়ে মুকুল রায়কে নিয়ে দু’জন ব্যাক্তি মুকুল রায়কে নিয়ে গিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর দাবি সোমবার একটি এজেন্সির তরফে এক অবাঙালিকে বলা হয়েছে, মুকুল রায়ের হাতে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য।
সোমবার থেকেই মুকুল রায়ের ‘নিখোঁজ’ হওয়াকে কেন্দ্র করে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। মুকুলের পদ্মে ফেরা ঘিরেও তৈরি হয়েছে জল্পনা। মঙ্গলবার অবশেষে এই প্রসঙ্গে মৌনতা ভাঙলেন শুভ্রাংশু রায়। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমিখি হয়ে শুভ্রাংশু বলেন,’আমি বিমানবন্দর এবং থানায় চিঠি লিখেছি। তাঁদের জানিয়েছে দু’জন ব্যাক্তি আমাকে না জানিয়ে বাবাকে নিয়ে চলে গিয়েছে। আমি থানার আইসি এবং এরায়পোর্টের ম্যানেজারকে বলেছিলাম বাবাকে যেন বিমান থেকে নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু তা হয়নি।’ কিন্তু কেন ঘটনা? কী কারণে মুকুল রায়েকে দিল্লি পাঠানোর প্রয়োজন? শুভ্রাংশু জানাচ্ছেন,’আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় অভিষেককে কালিমালিপ্ত করতেই এই রাজনৈতিক খেলা। কোনও একটি দল এটি করছে। কারণ এখন নিশানা অভিষেক। তিনিই দলটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’ মুকুল রায়ের মানসিক এবং শারীরিক পরিস্থিতি যথেষ্ট স্থিতিশীল নয় বলেই দাবি করেছেন শুভ্রাংশু। তাঁর কথায়,’মুকুল রায় মানসিক ভাবে সুস্থ নন। এখানে টাকার খেলা চলছে।’ তিনি আরও বলেন,’বাবার হাতে টাকা নেই। এখন বাবার মাসিক আয় ২১ হাজার টাকা মতো। গতকাল একটি এজেন্সির তরফে এক অবাঙালিকে বলা হয়েছে, মুকুল রায়ের হাতে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য।’ পাশাপাশি এখনও মুকুল রায়ের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা যায়নি বলেও জানান তিনি। মুকুল রায় দিনে ১৮টি ওষুধ খান। এই পরিস্থিতিতে তাঁর কিছু হলে সে দায়ভার কে নেবে সেই প্রশ্নও তোলেন শুভ্রাংশু।
আচমকাই রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিল্লি যাত্রা তৃণমূলের প্রবীণ নেতার। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এককালে তৃণমূলের চাণক্য বলে খ্যাত মুকুল রায়ের রাজধানী যাত্রা ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। অন্যদিকে বিধায়কের দিল্লি যাত্রার কারণ নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। মুকুল রায় নিজে জানিয়েছেন তিনি একটি বিশেষ প্রয়োজনে দিল্লি যাচ্ছেন। কিন্তু ঠিক কী সেই গুরুত্ত্বপূর্ণ কাজ সেবিষয় কিছুই জানাননি তিনি। এমনকী ছেলে শুভ্রাংসশু রায়কেও দিল্লি যাত্রার কারণ জানাননি কৃষ্ণনগরের বিধায়ক। নির্বাচনের মুখে রাজধানী যাত্রা কি কোনও বিশেষ ইঙ্গিত দিচ্ছে?
এর আগে ২০২১ সালের নির্বাচনের আগে বিজেপির সর্বভারতীয় বৈঠকে যোগ দিতে শেষবারের মত দিল্লি গিয়েছিলেন মুকুল রায়। তারপর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় তাঁর। দু’বছর পর গত সোমবার ফের দিল্লি পৌঁছলেন তিনি। ইতিমধ্যেই তাঁর দিল্লি যাত্রার কারণ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা যাচ্ছে মুকুলবাবু একটি বিশেষ প্রয়োজনে দিল্লি গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। আবার একাংশের দাবি ফের পদ্ম শিবিরে নাম লেখাতে চলেছেন তিনি। গোটা ঘটনা নিয়ে বিশেষ কিছু জানাননি শুভ্রাংশু রায়ও। তবে অসুস্থ শরীরে আচমকা দিল্লি যাত্রা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ছেলে শুভ্রাংশু।