ইডি-র জেরায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায় স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তাঁর দু’টি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া ৪৯.৮০ কোটি টাকা এবং পাঁচ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সোনার গয়নার মালিক আসলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে চার্জশিট জমা দিয়ে এমনই দাবি করল ইডি৷ ১৫২ পাতার চার্জশিটের ৭৪ নম্বর পাতায় অর্পিতার এই স্বীকারোক্তির কথা জানিয়েছে ইডি৷
ইডির চার্জশিটেই পরিষ্কার যে অর্পিতার দাবি, তাঁর নামে যে অংশীদারি কোম্পানি খোলা হয়েছিল, যার ৫০ শতাংশ অংশীদার ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee), সেই সংস্থায় অর্পিতার সিকি আনা বিনিয়োগও ছিল না। বিনামূল্যেই পেয়েছিলেন ৫০ শতাংশ শেয়ার। শুধু তাই নয়, অর্পিতার দাবি অনন্ত টেক্সফ্যাব প্রাইভেট লিমিটেড নামে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোম্পানির রেজিস্টার্ড অফিস যে তাঁর ক্লাবটাউনের ফ্ল্যাট সেটাই তাঁর জানা ছিল না।
অর্পিতা জানিয়েছেন, ওই সংস্থায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের শেয়ার ছিল। বাবলির মৃত্যুর পর সেই শেয়ার তাঁর নামে হস্তান্তর করা হয়। তখন জনৈক মনোজ জৈন নামে পার্থ ঘনিষ্ঠ এক ভদ্রলোক অর্পিতাকে ওই শেয়ার নিতে জোরাজুরি করেন। অর্পিতাকে বলা হয়, এই শেয়ার এখন তিনি নিয়ে নিন। পার্থর কন্যা সোহিনী চট্টোপাধ্যায় বিদেশে রয়েছেন। তিনি দেশে ফিরলে না হয় তিনি শেয়ার ফেরত দিয়ে দেবেন।
অর্পিতা এমনও দাবি করেছেন, তাঁর অজান্তেই বেলঘড়িয়ার ফ্ল্যাটের ঠিকানা একটি সংস্থার অফিস হিসেবে নথিভুক্তি করিয়ে নিয়েছিলেন পার্থ৷ অর্পিতার এই সমস্ত বয়ানকেই পার্থর বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণে হাতিয়ার করছে ইডি৷
( এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED)) সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করছেন অর্পিতা মুখার্জী ? তবে কি রাজসাক্ষী হতে চাইছেন? আদালতে পেশ করা ইডির চার্জশিট থেকে এই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে উঠেছে। কারণ, চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, বেহালার ডায়মন্ড সিটি ও বেলঘরিয়ার ক্লাব টাউনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া ৪৯ কোটি টাকার উৎস সম্পর্কে বড় দাবি করেছেন অর্পিতা। এ ব্যাপারে হাইকোর্টের কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন পার্থর বান্ধবী।