রাজ্য সরকার ও রাজভবনের মধ্যে সংঘাত এবার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। যেসব বিশ্ব বিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল, তাঁদের বেতন এবং ভাতা বন্ধ করে দিল রাজ্য সরকার। বিশ্ব বিদ্যালয়গুলির রেজিস্ট্রারদের এই মর্মে নোটিশ পাঠিয়েছে উচ্চ শিক্ষা দপ্তর।
এর আগে রাজ্যপাল যাঁদেরকে অস্থায়ী উপাচার্য পদে নিয়োগ করেছিলেন, তাঁদের কাছেই ব্রাত্য বসু আবেদন জানিয়েছিলেন যাতে এই দায়িত্ব তাঁরা প্রত্যাখ্যান করেন। তবে ব্রাত্য বসুর আবেদনে সাড়া দিয়ে কেবলমাত্র একজনই উপাচার্যের পদ গ্রহণ করেননি। বাকি সবাই রাজ্যপালের কথা মতো নিজেদের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
নোটিশে জানানো হয়েছে, রাজ্যপালের এ ভাবে সরাসরি উপাচার্য নিয়োগের কোনও এক্তিয়ার নেই। সেটা করতে হয় উচ্চশিক্ষা দফতরের মাধ্যমে। তাই উচ্চশিক্ষা দফতর ওই উপাচার্যদের বৈধ উপাচার্য হিসেবে গণ্য করছে না। তাঁদের জন্য বরাদ্দ বেতন এবং ভাতাও দেবে না রাজ্য সরকার।
সম্প্রতি দু দফায় মোট ১৪ জন অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ। প্রথমে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন তিনি। এরপর ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়। রাজ্যপালের এই নির্দেশ প্রকাশ্যে আসার পরই একে বেআইনি বলে আক্রমণ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর অভিযোগ, উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা না করেই অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল। তিনি উপাচার্যদের পদ ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধও করেন। কিন্তু এক জন ছাড়া সকলেই অস্থায়ী উপাচার্যের পদে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির রেজিস্ট্রারদের এই নির্দেশ পাঠিয়েছে উচ্চ শিক্ষা দপ্তর।
রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়েছে। মামলা দায়ের করেছেন এক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। মামলায় রাজ্যপালকে পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মামলায় পার্টি করা হয়েছে রাজ্যকেও। আজ সোমবার এই মামলার শুনানির সম্ভবনা রয়েছে।