বুধবার ইডির জিজ্ঞাসাবাদের সময় বেশ কিছু নথি দেখিয়ে জিজ্ঞসাবাদ করা হয়েছিল সুকন্যাকে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে সুকন্যা কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি। অনুব্রত মণ্ডলের হিসাবরক্ষক মনীশ কোঠারিকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পায় ইডি। এই সমস্ত বিষয়ে জিজ্ঞসাবাদ করা হলে কোনও উত্তর দিতে পারেননি অনুব্রত-কন্যা।
সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mondal)। সামান্য স্কুল শিক্ষিকা হয়ে পাহাড় প্রমান সম্পত্তির মালিক তিনি, কি সেই টাকার উৎস। এই নিয়েই ধন্দে ইডি (ED) অফিসাররা। অন্যদিকে, তার শিক্ষিকার চাকরি নিয়েও উঠছে হাজারো প্রশ্ন। গতকাল এই সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সুকন্যাকে। তবে একাধিক প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ায় তদন্তে অসহযোগিতার কারণে গ্রেফতার হন তিনি।
ইডি সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে তিনজন মহিলা অফিসার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে গতকাল। মনীশ কোঠারিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি তদন্তকারী অফিসারদের জানিয়েছিলেন যে, অনুব্রত মণ্ডল এবং সুকন্যা যে সমস্ত তথ্য পাঠাতেন তাঁর কাছে, সেই সব তথ্য অনুযায়ী সমস্ত অ্যাকাউন্ট দেখে দিতেন তিনি। এক্ষেত্রে বুধবার যখন অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে নানা হিসেবের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, সেই প্রসঙ্গে সুকন্যা বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। যা বলার আমার বাবা এবং মনীশ কোঠারি বলতে পারবেন।’
ইডি সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত সুকন্যার নামে ব্যাঙ্কে ১৬ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিটের হদিশ মিলেছে। এখানেই শেষ নয়, বীরভূমের বোলপুর বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় অনুব্রত কন্যার নামে রয়েছে বিঘার পর বিঘা জমি। যার পরিমান প্রায় ১০ বিঘা। এ ছাড়াও বোলপুরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে একাধিক জমি। এখানেই শেষ নয়।
ইডি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে যে, অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে মোট ২০ কোটি টাকা জমা পড়েছিল ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত। ইডির পক্ষ থেকে সুব্রত বিশ্বাস নামে এক ব্যাংক কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছিল, বিভিন্ন সময় অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চালকের হাত থেকেই টাকা পাঠাতেন অনুব্রত। ৬ কোটি টাকা পাঠিয়ে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে জমা করতে বলা হয়েছিল। সেই সমস্ত সম্পত্তির মধ্যে ছিল একাধিক রাইস মিল এবং একাধিক কোম্পানির নামে অ্যাকাউন্ট।
ওই জমা করা টাকার মধ্যে থেকেই কেষ্ট কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের নামে তিন কোটি টাকা এফডি করা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা। অনুব্রত মণ্ডলের কন্যার নামে যে ২৬ টি সম্পত্তি কেনা হয়েছিল, সেই সমস্ত সম্পত্তি ইডির নজরে আগে থেকেই ছিল। আবার একাধিক সম্পত্তি কেনা হয়েছিল ভোলে বোম রাইস মিলের নামেও।
ওই জমা করা টাকার মধ্যে থেকেই কেষ্ট কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের নামে তিন কোটি টাকা এফডি করা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা। অনুব্রত মণ্ডলের কন্যার নামে যে ২৬ টি সম্পত্তি কেনা হয়েছিল, সেই সমস্ত সম্পত্তি ইডির নজরে আগে থেকেই ছিল। আবার একাধিক সম্পত্তি কেনা হয়েছিল ভোলে বোম রাইস মিলের নামেও।
কি ভাবছেন এখানেই শেষ? একদমই নয়, বীরভূমে সুকন্যার নামে রয়েছে একটি চালকল। রয়েছে একটি সংস্থাও। অন্যদিকে, সুকন্যার স্কুলের চাকরি নিয়েও বহু প্রশ্ন। অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চাকরি মিলেছিল তার। অনেকেই বলেন, বাবার দৌলতেই সেই চাকরি। আবার স্কুলে না গিয়ে বাড়িতে বসে বেতন নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
l
আজ বৃহস্পতিবার অনুব্রত কন্যাকে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। আপাতত তাকে পাঁচদিনের ইডি হেফাজতে চাইতে পারেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।