প্রথমে শ্রীকান্ত মাহাতো, এবার শৈবাল গিরি। মেদিনীপুরের জেলা রাজনীতিতে ফের চাঞ্চল্য। মমতা সহ শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তৃণমূলের দাঁতন ২ নম্বর ব্লকের ব্লক সভাপতি তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি। সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে একটি অডিও।
“নেত্রী দেখা করবে না, অভিষেক দেখা করবে না। অভিষেকের খেলা চলছে, আইপ্যাকের খেলা চলছে। অভিষেক জানেই না আইপ্যাকের টাকার খেলা।”
“আইএনটিটিইউসি থেকে কালেকশন করতে পারছে না। লক্ষ লক্ষ টাকা সবাই নেয়। অজিত মাইতি নিয়েছে, দিনেন রায় নেয়।” “দিদি আমাদের সঙ্গে দেখা করবে? চোর ডাকাতদের সঙ্গে দেখা করবে দিদি।”, শৈবাল গিরির বিস্ফোরক বক্তব্য।
তাঁর অডিও রীতিমতো ভাইরাল। বিষয়টি জানেন শৈবাল গিরিও। এই বিষয়ে তিনি বলেন ‘দলের এক কর্মী চা খেতে ডেকে আমাদের কথপোকথন ফোনে রেকর্ড করেছেন। আমার ক্ষতি করার উদ্দেশেই সে ওই কাজ করেছে। যদিও আমার কোনও ক্ষতি সে করতে পারবে না। এখন মনে হয় কলেজ জীবন থেকে রাজনীতি করাটাই ভুল হয়েছিল।’
এখানেই শেষ নয়। কিছুদিন আগেই শ্রীকান্ত মাহাতোর ভাইরাল হওয়া বক্তব্যের সঙ্গে শৈবাল গিরির বক্তব্যের তুলনা টানেন দ্বিতীয় কণ্ঠস্বর। জবাবে শৈবালবাবুর চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি, “দু’দিন অপেক্ষায় আছি। দল ছেড়ে দেব, আর কি আছে।” তার কটাক্ষ, “আমার পুলিশ আসতে পারবে না, ইডিও আসতে পারবে না। আমার কি করবে?”
একটি জনপ্রিয় বাংলা সংবাদমাধ্যমের কাছে কার্যত নিজের বক্তব্য স্বীকার করে নিয়েছেন শৈবাল গিরি। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তার ক্ষুব্ধ বক্তব্য, “পার্থদার ঘটনা বের হচ্ছে। আমাদের কষ্ট হয়, দিদি কি জানেন না মুখ্যমন্ত্রী হয়ে! গ্রামাঞ্চলে প্রতিদিন আমাদের মুখ দেখানো ভার হচ্ছে। সেই জন্য বলেছি। সেটা যদি অন্যায় হয়, তাহলে অন্যায় করেছি।”
দাঁতনের বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এই বিষয়ে বলেন, ‘পাগলের প্রলাপ বকছেন। তার কথার কী উত্তর দেব। শৈবাল দলের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। দলই তার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’
এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ভোলেনি বিজেপিও। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর গুচ্ছাইত বলেন, ‘আজ শৈবাল গিরি গেছে। কাল অন্য কেউ যাবে। আস্তে আস্তে দলের সমস্ত কর্মীরাই নেত্রীর বিরুদ্ধে চলে যাবে। যার প্রতিফলন শুরু হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে।’ তবে শৈবালের মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।