হঠাত একটি রাতের বিরাট পুলিশি অভিযানে টালমাটাল হয়ে গেল পর্ষদ চত্বর, মধ্যরাতে স্লোগানে, চিতকারে আর তারপর স্তব্ধতায় জেগে রইল শুধু টেট উত্তীর্ণদের রেখে যাওয়া ‘ন্যায্য’ দাবি। আর তাঁদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চটি-জুতো।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কলকাতার করুণাময়ী চত্বরে অবস্থানে বসে থাকা টেট আন্দোলনকারীদের জোর করে তুলে দিল পুলিশ।। ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের ধাপে ধাপে আটক করা হয়। তাঁদের বাসে করে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। কয়েক জন আন্দোলনকারী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে ছিল র্যাফ এবং পুলিশের বিশাল বাহিনী। করুণাময়ীর যে জায়গায় গত তিন দিন ধরে অনশন বিক্ষোভ চালাচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা, সেই চত্বর হয়ে যায় একেবারে শুনশান।
এ দিন করুণাময়ী থেকে আটক করে বিক্ষোভকারীদের বিধাননগর উত্তর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মাত্র কিছুক্ষণের মধ্যেই ৮৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা আন্দোলনকে পুলিশকর্তারা কার্যত লণ্ডভণ্ড করে দিতে সক্ষম হন পুলিশকর্তারা। তবে যেখানে সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে মহিলাদের গ্রেফতারির ক্ষেত্রে নানা বাধা রয়েছে, অনুমতির প্রয়োজন হয়েছে। সেক্ষেত্রে কীভাবে মধ্যরাতে মহিলা বিক্ষোভকারীদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এ দিন আটক করার পরে ছিঁড়ে ফেলা হয় বিক্ষোভকারী পোস্টার, ব্যানার।
প্রসঙ্গত, চারদিন ধরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতর আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র (এপিসি) ভবনের সামনে টেট পাশ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের আমরণ অনশন চলছে। গত দু’ দিনে অনশন মঞ্চে অসুস্থ হয়েছেন একাধিক চাকরিপ্রার্থী। কিন্তু নিজেদের দাবিতে অনড় ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, পদ্ধতি মেনে আবেদন ও ইন্টারভিউয়ে বসতে হবে ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের। আন্দোলনকারীদের দাবি, তাঁরা দু’-দু’বার ইন্টারভিউ দিয়েছেন, ফের ইন্টারভিউ দিতে নারাজ।